বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছিল ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। এর পর থেকে আইন মন্ত্রণালয় আইনি সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, ডিজিটালাইজেশন, হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
আইনি সংস্কারের মধ্যে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন-১৯৭৩ সংশোধন করে গুমকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, সরাসরি সম্প্রচার, সাক্ষী নিরাপত্তা, আপিল ও ক্ষতিপূরণের বিধান যুক্ত হয়েছে। বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে ‘সুপ্রিম কোর্ট বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করা হয়েছে।
ফৌজদারি আইনের সংশোধনে গ্রেফতার ও রিমান্ড প্রক্রিয়া আরও জবাবদিহিমূলক করা হয়েছে। দেওয়ানি কার্যবিধি সংস্কারে অনলাইনে সমন জারি, এফিডেভিটের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ এবং দ্রুত রায় কার্যকর করার বিধান যুক্ত হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তদন্ত ও বিচার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা ও ব্যর্থতার জন্য তদন্ত কর্মকর্তার জবাবদিহি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫ প্রণয়ন করে আগের নিপীড়নমূলক ধারাগুলো বাতিল করা হয়েছে। বিবাহ নিবন্ধনে অনলাইন সুবিধা ও জেন্ডার বৈষম্য নিরসনে বিধান পরিবর্তন হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা ‘নো ভিসা রিকোয়ার্ড’ স্টিকার থাকলে বা জন্মসনদ/জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন করতে পারবেন।
প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বাড়াতে সুপ্রিম কোর্টকে বিচারক নিয়োগে ক্ষমতা প্রদান, কেন্দ্রীয়ভাবে আদালত কর্মচারী নিয়োগের নীতিমালা তৈরি, তথ্য ও সেবা কেন্দ্র স্থাপন, বিচারকদের সম্পত্তি হিসাব সংগ্রহ এবং সাবরেজিস্ট্রারদের ব্যক্তিগত তথ্য বিবরণী সংরক্ষণ উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ।
ডিজিটালাইজেশনে আদালত ব্যবস্থাকে আধুনিক করতে অনলাইন বেইলবন্ড, ই-ফ্যামিলি কোর্ট প্রতিষ্ঠা, সাক্ষ্যগ্রহণে অনলাইন সুবিধা, অ্যাটেস্টেশন প্রক্রিয়া শতভাগ অনলাইন এবং বিচার বিভাগের ৫০ শতাংশ নথি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে জেলা কমিটি ও আইন বিভাগের সুপারিশে ১৫ হাজার মামলা এবং সাইবার আইনের অধীনে ৪০৮টি স্পিচ-অফেন্স মামলা ও গণ-অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ৭৫২টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
দৈনন্দিন কার্যক্রমে গত এক বছরে মন্ত্রী পর্যায়ে ১২৮৩টি নথি নিষ্পত্তি, ৩৯১টি আইনি মতামত প্রদান এবং ১ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি কাগজপত্র সত্যায়ন করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ।
নতুন কমিশনগুলোকে সাচিবিক সহায়তা, আইন কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বিচারপতি নিয়োগে সহযোগিতা এবং প্রবিধান কোডিফিকেশনের উদ্যোগ নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নতুন বিচারক ও প্রসিকিউটর নিয়োগসহ সর্বোচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগেও সাচিবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।